• iconjamiatulmansur.web@gmail.com
  • iconIslambag, West Joydebpur
  • icon+880 1755 632244

About us

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি ও অবদান

স্বাগতম জামিয়াতুল মানসুর বাংলাদেশ

ভূমিকা: কোন জাতির সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের প্রধান অবলম্বন আদর্শ শিক্ষা। শিক্ষাই তার লালিত বিশ্বাস ও জীবনবোধের বাস্তব দর্পণ। আদর্শ সমাজ গঠনের মূলমন্ত্র, জাতির মেরুদণ্ড। জাতীয় আদর্শ ও মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রণীত শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড সুদৃঢ় করতে সক্ষম। আদর্শ বিবর্জিত নীতি-নৈতিকতাহীন শিক্ষা কিছুতেই প্রকৃত মনুষ্যত্ব উপহার দিতে পারে না। বিজাতীয় অপসংস্কৃতি থেকে মুসলিম উম্মাহকে রক্ষা ও আসহাবে সুফফার সেই মহান শিক্ষাকে পুনর্জাগরণের মানসে ১৮৬৬ ঈসায়ী সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্ববিখ্যাত ইসলামী বিদ্যাপীঠ দারুল উলূম দেওবন্দ। যা অল্প সময়ের ব্যবধানে উপমহাদেশের সীমানা অতিক্রম করে আন্তর্জাতিক বিশ্বের তথাকথিত সভ্যতার মুখে করাঘাত করে। উপমহাদেশে বিশেষ করে বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাগুলো দারুল উলূম দেওবন্দেরই আদর্শের প্রতীক। 'জামি'আতুল মানসুর বাংলাদেশ' দারুল উলুম দেওবন্দের পাঠ্যক্রম অনুসারে পরিচালিত দেশের শীর্ষস্থানীয় ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আলহাজ্ব খন্দকার মনসুর হোসেন সাহেবের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৪৩৯ হিজরী মোতাবেক ২০১৮ ঈসায়ী সালে ঢাকার উপকণ্ঠে গাজীপুর মহানগরের প্রাণকেন্দ্র জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ইসলামবাগ মসজিদ রোডে শান্ত-শীতল মনোমুগ্ধকর পরিবেশে প্রতিষ্ঠিত হয় "জামি'আতুল মানসুর বাংলাদেশ”। হিফজ-মক্তব ও কিতাব বিভাগের কয়েকটি ক্লাস নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। অতঃপর শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতী মনসূরুল হক দা. বা. এর তত্ত্বাবধানে ১৪৪১ হিজরী মোতাবেক ২০২০ ঈসায়ী সালে মিশকাত (ডিগ্রি সমমান) জামাত/ক্লাস পর্যন্ত উন্নীত করা হয়। এক বছরেই বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত ৪৪ তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের মধ্যে কয়েকজন মেধা তালিকায় স্থান লাভসহ ঈর্ষণীয় ফলাফল অর্জন করেছে আলহামদুলিল্লাহ! যার ফলে জামি'আ পরিচালনা পরিষদ ও যোগ্য বিজ্ঞ আসাতিযায়ে কেরামের আগ্রহে এবং শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতী মনসূরুল হক দা. বা. এর পরামর্শে ১৪৪২ হিজরী মোতাবেক-২০২১ঈ. সালে দরসে নিজামীর সর্বোচ্চ জামাত দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) খোলা হয়।

জামি'আর কর্মধারা: 'জামি'আতুল মানসুর বাংলাদেশ' ধর্মীয় শিক্ষা সমন্বিত একটি অন্যতম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। এর শিক্ষাক্রম শিশুশ্রেণী হতে শুরু করে সর্বোচ্চ ইসলামী শিক্ষা দাওরায়ে হাদীস (মাস্টার্স) এবং উচ্চতর শিক্ষা ইফতা বিভাগ পর্যন্ত বিস্তৃত। ক্রমবিন্যস্ত শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে কুরআন-হাদিস, ফিকহ-আকাইদসহ আরবি ও উর্দু সাহিত্যের মৌলিক কিতাবাদি বিশদভাবে শিক্ষা দেওয়া হয়। এছাড়াও বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ভূগোল, বিজ্ঞান, দর্শনসহ সমুদয় বিষয়ে প্রয়োজন পরিমাণ শিক্ষা দেওয়া হয়। নিয়মতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি ছাত্রদেরকে আদর্শ ও ধর্মীয় নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য জামি'আয় বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। দেশের সর্বসাধারণের জন্যে দ্বীনের খেদমত আঞ্জাম দেয়ার লক্ষ্যে জামি'আর পক্ষ থেকে বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।

জামি'আর বর্তমান কার্যক্রমকে তিনটি পর্যায়ে বিন্যস্ত করা যায়।
১. শিক্ষাব্যবস্থা। ২. প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি। ৩. জনসেবামূলক কার্যক্রম।

প্রতিটি পর্যায়ের বিস্তারিত বিবরণ উল্লেখ করা হচ্ছে।
জামি'আর শিক্ষাব্যবস্থা:
জামি'আর শিক্ষাব্যবস্থায় মোট ৫টি বিভাগ রয়েছে। প্রতিটি বিভাগের জন্য আলাদাভাবে দায়ীত্বশীল উস্তাদ রয়েছেন।
বিভাগগুলোর বিবরণ নিম্নরূপ:

১. মক্তব বিভাগ:
এই বিভাগে শিশুদেরকে বিশুদ্ধভাবে কুরআনুল কারীম তিলাওয়াত করার নিয়ম-নীতি শিক্ষা দেওয়ার পর আম্মা পারা মুখস্থ করানো হয় এবং বাস্তব প্রশিক্ষণসহ উযু-গোসল, নামায, নামাযের ইমামতি, কাফন-দাফন এবং প্রয়োজনীয় মাসায়েল, দু'আ ও অর্থসহ ৪০ টি হাদিস শেখানো হয়। সহজ পদ্ধতিতে প্রাথমিক বাংলা, গণিত, ইংরেজিও এ সময় পড়ানো হয়। নূরানী পদ্ধতির এই কারিকুলাম শিশুদের উপযোগী এবং বিজ্ঞানসম্মত। এ সিলেবাস শেষ করতে একজন ছাত্রের সময় লাগে সর্বোচ্চ দু'বছর।

২. হিফজ বিভাগ:
এই বিভাগে মক্তব সমাপ্তকারী ছাত্রদেরকে অনুর্ধ্ব তিন বছরে সম্পূর্ণ কুরআনুল কারীম মুখস্থ করানো হয়। এরপর খতম শোনানোর মাধ্যমে এক বছরে পাকাপোক্ত করানো হয়। পাশাপাশি তিলাওয়াত বিশুদ্ধ ও সুন্দর করার লক্ষ্যে দক্ষ ক্বারী সাহেবের মাধ্যমে মশক করানো হয়। এ বিভাগে উত্তীর্ণ ছাত্রদেরকে "হাফেজ” উপাধি দিয়ে দস্তারবন্দী-পাগড়ী প্রদান করা হয়।

৩. কিতাব বিভাগ:
এটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থাপনার সমৃদ্ধ একটি বিভাগ। এ বিভাগে মক্তব বা হিফজুল কুরআন শিক্ষা সমাপন-কারী ছাত্রদেরকে মাত্র ১০ বছরে পূর্ণাঙ্গ ধর্মীয় শিক্ষা প্রদানের চেষ্টা করা হয়। এ সময়ে তাদেরকে কুরআন, হাদীস, তাফসীর, আকাইদ, আদব, নাহু, সরফ, বালাগাত, মানতিক, হেকমত ইত্যাদিসহ যাবতীয় ধর্মীয় বিষয়ে পূর্ণ পারদর্শী করে তোলার দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হয় এবং তাদেরকে সর্বব্যাপী দ্বীনী খেদমত আঞ্জাম দেয়ার জন্য দাওরায়ে হাদিসের সনদ প্রদান করা হয়। এ বিভাগে উত্তীর্ণ আলেমগণ 'মাওলানা' উপাধি লাভ করে থাকেন।

৪. ইফতা বিভাগ:
কিতাব বিভাগের সর্বোচ্চ পর্যায় তাকমীলে হাদীস ক্লাসের শিক্ষা সমাপনকারী ছাত্রদের জন্য তাখাসসুস ফিল ফিকহ তথা উচ্চতর ফিকহ/ইসলামী আইন গবেষণা বিভাগ। দাওরা হাদিসের চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ ছাত্ররা এই বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়ে থাকে। তাদেরকে এক বছরের অনুশীলনের মাধ্যমে যুগ সমস্যার সমাধানে সহীহ ফাতওয়া প্রদানের যোগ্যতা সম্পন্ন করে 'মুফতী' সনদ প্রদান করা হয়।

৫. উলূমুল হাদীস বিভাগ:
হাদীস শাস্ত্রের আলোচনা অনেক বিস্তৃত। এ শাস্ত্রে হাদীসের কিতাব সমূহের স্তরবিন্যাস, হাদীসের সূত্র ও বর্ণনার গ্রহণযোগ্যতা, বর্ণনাকারীর অবস্থাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা করা হয়। এসব বিষয়ে দিকনির্দেশনা গ্রহণ ও প্রদান একজন আলেমের জন্যে সবসময় অত্যাবশ্যক। এই প্রয়োজনের প্রতি লক্ষ্য রেখে জামি'আ কর্তৃপক্ষ এতদসংক্রান্ত কয়েক লক্ষ টাকার কিতাব সংগ্রহ করে এই বিভাগ চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ বিভাগে ভর্তি হওয়ার জন্য দাওরায়ে হাদিসের চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়া আবশ্যক। তাদেরকে এক বছরের অনুশীলনের মাধ্যমে হাদিস সম্পর্কে পারদর্শী করে গড়ে তোলা হবে এবং সনদ প্রদান করা হবে ইনশাআল্লাহ। উল্লেখ্য, এ বিভাগটি এখনো চালু হয়নি। তবে প্রক্রিয়াধীন আছে। ইনশাআল্লাহ অচিরেই চালু হবে।

জামি'আর প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচি:
ছাত্রদেরকে আদর্শ দ্বীনী সমাজসেবকরূপে গড়ে তুলতে শুধু ধারাবাহিক শিক্ষাক্রমই যথেষ্ট নয়। সে জন্য প্রয়োজন নেসাবী তা'লীমের পাশাপাশি সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ কার্যক্রম। সে লক্ষ্যে জামি'আ ৫টি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

১. ছাত্র পাঠাগার:
ইলম হাসিলের পরিধি বিস্তৃত করতে হলে পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি চরিত্র গঠনমূলক তথ্য ও তত্ত্বসমৃদ্ধ গ্রন্থ পাঠের বিকল্প নেই। তাই জামি'আর সিলেবাসভুক্ত ধারাবাহিক শিক্ষাক্রমের পাশাপাশি ছাত্রদের বহুমুখী জ্ঞানার্জন এবং দেশ ও জাতির সমকালীন অবস্থা ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে অবগতি লাভের জন্য বিভিন্ন বিষয়ের উপর তথ্যবহুল বই-পুস্তক, পত্র-পত্রিকাসমৃদ্ধ একটি উচ্চমানের পাঠাগারের ব্যবস্থা রয়েছে। শিক্ষানুরাগী ছাত্ররা মৌলিক লেখাপড়ার অবসরে স্ব-স্ব অভিরুচি অনুযায়ী বই সংগ্রহ করে যুগোপযোগী বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়।

২. প্রতিযোগিতামূলক বক্তৃতা প্রশিক্ষণ:
কুরআন-হাদীসের জ্ঞানার্জনের পর সর্বসাধারণের মাঝে দ্বীনী দাওয়াত প্রদানের জন্য বাকশক্তির প্রয়োজন অপরিসীম। সে জন্যই উদ্ভাদগণের বিশেষ তত্ত্বাবধানে ছাত্রদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক সাপ্তাহিক বক্তৃতা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ছাত্ররা যুগোপযোগী বিভিন্ন বিষয়ের উপর অনুশীলন-মূলক বক্তৃতা প্রদান করে থাকে এবং বিভিন্ন বিষয়ে বিতর্ক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। বাংলা ও আরবি ভাষায় ছাত্রদেরকে সুন্দর উপস্থাপনা ও সাবলীল বর্ণনাভঙ্গি প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য প্রতি বৃহস্পতিবার বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে।

৩. দেয়ালিকা:
দেশের সাহিত্যচর্চা বর্তমানে একশ্রেণীর বুদ্ধি বেচা লোকদের হাতে জিম্মি। পাশ্চাত্যমুখী বিকৃত রুচির এসব কলম ব্যবসায়ীর বিপরীতে ইসলামী সাহিত্যের স্বচ্ছ নির্মল জ্যোতি ছাত্রদেরকে যথাযথভাবে গড়ে তোলার জন্য লেখনীর উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়। নিয়মতান্ত্রিকভাবে লেখা-পড়ার সাথে সাথে বাংলা ও আরবি ভাষায় পারদর্শীতার মাধ্যমে রুচিশীল সাহিত্য চর্চার জন্য ছাত্রদের উদ্যোগে আরবি ও বাংলা দেয়ালিকা প্রকাশ করা হয়।

৪. তারবিয়াতি আমলের প্রশিক্ষণ:
লেখাপড়ার পাশাপাশি জামি'আর প্রশিক্ষণমূলক কর্মসূচির আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো ছাত্রদের জন্য তারবিয়াতি প্রশিক্ষণ। সেজন্য দৈনন্দিন সকাল-বিকাল আদাবুল মু'আশারাত, তা'লীমুদ্দীন, এক মিনিটের মাদরাসা, কিতাবুল ঈমান ও নবীজী'র (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসল্লাম) সুন্নাত ইত্যাদি কিতাব তা'লীম করা হয়। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ, মাগরিবের পূর্ব মুহূর্তে দু'আ মোনাজাতসহ ছাত্রদের আমলী জিন্দেগী গঠনের জন্য বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে। আয়োজন করা হয় সাপ্তাহিক/মাসিক তারবিয়াতী জলসার। ছাত্ররা নিজেদের নামাজ সহীহ করে জনসাধারণকেও যেন সহিহ পদ্ধতিতে হাতে-কলমে মশক করাতে পারে- সেজন্য প্রতি সপ্তাহে একবার সুন্নাত তরীকায় আযান, ইকামাত ও নামায আদায়ের আমলী মশক করানো হয়।

৫. কুরআনুল কারীম ও নাহু- সরফের বিশেষ প্রশিক্ষণ:
পবিত্র কুরআনুল কারিমের তিলাওয়াতকে সুন্দর থেকে সুন্দরতর করার লক্ষ্যে তিলাওয়াত প্রশিক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে এবং অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষকমন্ডলীর তত্ত্বাবধানে নাহু-সরফের উপর আকর্ষণীয় প্রশিক্ষণ হয়ে থাকে।

জামি'আর জনসেবামূলক কার্যক্রম:
ছাত্রদের তা'লীম তারবিয়াতের পাশাপাশি জামি'আ জনসেবামূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। এক্ষেত্রে দ্বীনী ও পার্থিব উভয় প্রকার সেবার লক্ষ্যে জামি'আর ৫ টি বিভাগ রয়েছে।

১. ফাতওয়া ও ফারায়েয বিভাগ:
মানুষের জন্য সর্বোত্তম সেবা হলো দ্বীনী সেবা। জনসাধারণের দ্বীনী সেবায় জামি'আর ফাতাওয়া বিভাগ থেকে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয়, বিভিন্ন অবস্থা/ পরিস্থিতিতে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার বিশ্লেষণ করে যাবতীয় সমস্যার ইসলামী সমাধান প্রদান করা হয় এবং জনসাধারণের পেশকৃত মাসআলা-মাসাইল সম্পর্কিত সব ধরনের প্রশ্নের শরঈ জবাব প্রদান করা হয়। এছাড়াও সময়োপযোগী শরীয়তসম্মত পন্থা নির্ণয়ে যাবতীয় গবেষণা করা হয়। আর মৃত ব্যক্তির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ওয়ারিসদের মাঝে শরীয়তের বিধান মোতাবেক সুষ্ঠুভাবে বণ্টনের লিখিত রূপরেখা বর্ণনা করা হয়।

২. দাওয়াত ও তাবলীগ:
এ বিভাগের আওতায় ছাত্রদেরকে ইসলামী জিন্দেগী গঠন ও জনসমাজে দ্বীনী দাওয়াত প্রদানের বাস্তব প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। এ পর্যায়ে ছাত্রদেরকে তাবলীগী জামাতের সাথে সম্পৃক্ত করে অসংখ্য ছাত্র দ্বারা তাবলীগী কার্যক্রম আঞ্জাম দেওয়া হয়। প্রতি ছুটিতে অসংখ্য ছাত্র তাবলীগী প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সময় লাগানোর জন্য বের হয়ে থাকে। প্রতি সপ্তাহে ২৪ ঘন্টা সময় লাগানোর মাধ্যমে নিয়মিত সাপ্তাহিক তাবলীগী কর্মসূচি পালন করা হয়। এভাবে জামি'আত্ম সার্বক্ষণিকভাবে দাওয়াত ও তাবলীগের মহান দায়িত্ব আঞ্জাম দিয়ে চলছে আলহামদুলিল্লাহ।

৩. মজলিসে দাওয়াতুল হক:
জনসাধারণকে দ্বীনী প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ করে পূর্ণাঙ্গ দ্বীনের উপর পরিচালনার জন্য জামি'আর পক্ষ থেকে হাকীমুল উম্মত হযরত মাওলানা আশরাফ আলী থানভী রহ. এর সিলসিলার মাওলানা শাহ আবরারুল হক রহ. পরিচালিত মজলিসে দাওয়াতুল হকের কর্মসূচি সুচারুরূপে আঞ্জাম দেওয়া হয়। এর আওতায় সর্বসাধারণের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন মসজিদে বাদ মাগরিব তাফসীরুল কুরআন বা দ্বীনী আলোচনার মাধ্যমে তাদেরকে দ্বীন শেখানোর সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো হয়।

৪. রচনা ও প্রকাশনা বিভাগ:
তাবলীগ ও দাওয়াতুল হকের পাশাপাশি দ্বীনী দাওয়াতের জন্য রয়েছে জামি'আর রচনা ও প্রকাশনা বিভাগ। এ বিভাগ থেকে দ্বীনী জরুরি বিষয়াবলী সমৃদ্ধ বই-পুস্তক প্রকাশ করা হয়।

৫. দুস্থ ও মানবতার সেবা:
দ্বীনী সহযোগিতার পাশাপাশি জামি'আ বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াবার দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করে থাকে। সে লক্ষ্যে জামি'আর পার্শ্ববর্তী এলাকার গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে যথাসম্ভব সাহায্য প্রদান করা হয়। বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন দুর্যোগে জামি'আর কাফেলা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যায়। জামি'আর নির্দেশনায় প্রতি ছুটিতে ছাত্র-শিক্ষক নিজ নিজ এলাকায় জনকল্যাণমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকেন আলহামদুলিল্লাহ। তাছাড়া দেশের সর্বসাধারণের দ্বীন পালনের সুবিধার্থে জামি'আর সভাপতি মহোদয়ের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অঞ্চলে মসজিদ-মাদরাসা স্থাপন করা হয়েছে। উল্লিখিত বহুমুখী ব্যবস্থাপনা নিয়ে "জামি'আতুল মানসূর বাংলাদেশ” একটি নাম, একটি প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশে ইসলামের বিশুদ্ধতম কেন্দ্রভূমি। সুন্নাতের অনুসারী সালাফে সালেহীনের আদর্শে আদর্শবান এক ঝাঁক বুলবুলির লালনকেন্দ্র, ইলমে এলাহীর যথাযথ সংরক্ষণ ও প্রসারের দুর্ভেদ্য দুর্গ। অসংখ্য স্বপ্ন, সুদৃঢ় সংকল্প; স্বপ্ন ও সংকল্পের চমৎকার সমন্বয়, সুদূর প্রসারী দৃষ্টি, সুনির্দিষ্ট গন্তব্য, আর সে গন্তব্যে পৌঁছার নিরন্তর পথচলা। আল্লাহ তা'আলা জামি'আকে সে গন্তব্যে পৌঁছার তাওফীক দান করুন। আমীন!

বিশেষ আবেদন:
"জামি'আতুল মানসুর বাংলাদেশ” বর্তমানে ভাড়া বাড়িতে পরিচালিত হচ্ছে। নিজস্ব শিক্ষা ভবন ও মসজিদ না থাকায় তা'লীম-তারবিয়াতের আরো মানোন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাই নিজস্ব জায়গায় বহুতল শিক্ষা ভবন ও মসজিদ খুবই প্রয়োজন। তাছাড়া পাঁচশত ছাত্রের মধ্য থেকে প্রায় ২৫০ জন ছাত্রকে ফুল/আংশিক ফ্রী খাবার দেওয়া হয়। তাই এর খরচ সরবরাহের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন; যা আপনাদের মত দ্বীনদার, পরহেযগার জামি'আর হিতাকাঙ্খী ও শুভাকাঙ্ক্ষী ব্যক্তিবর্গের দ্বারাই ব্যবস্থা হয়ে থাকে। জামি'আ কর্তৃপক্ষ উক্ত অর্থ সংগ্রহের জন্য নিম্ন বর্ণিত কয়েকটি পদ্ধতি অবলম্বন করেছেন।

১. লিল্লাহ ফান্ড:
এ ফান্ডে যাকাত-ফিতরা, মান্নত, কাফফারা, ফিদইয়াহ ও কুরবানীর চামড়া বা তার মূল্য সংগ্রহ করা হয় এবং তা অসহায়, এতিম, অভাবী ছাত্রদের খাবার, চিকিৎসা ও জরুরী প্রয়োজনে খরচ করা হয়।

২. সাধারণ ফান্ড:
এ ফান্ডে এককালীন দান, আজীবন সদস্যদের দান, মাসিক দান ইত্যাদি সংগ্রহ করে তা উদ্ভাদ-ষ্টাফদের বেতন-ভাতাসহ জামি'আর অন্যান্য জরুরী প্রয়োজনে খরচ করা হয়।

জামি'আর ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নাম্বার:
সাধারণ ফান্ড:
জামিআতুল মানসুর বাংলাদেশ। হিসাব নং ০৭৬১১২০১১৫৭১৪
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, জয়দেবপুর, গাজীপুর শাখা।

লিল্লাহ ফান্ড:
জামিআতুল মানসুর বাংলাদেশ। হিসাব নং ০৭৬১১২০১১৫৭২৫
আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, জয়দেবপুর, গাজীপুর শাখা।